আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন: নির্বাচন নিয়ে যাতে কোনো সংশয় না থাকে, কেউ প্রশ্ন করতে না পারে সেজন্য আমরা নির্বাচন উন্মুক্ত করে দিয়েছে। জনগণ যাকে খুশি তাকে ভোট দেবে, তারা সেটা দিয়েছে। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হয়েছে।’
গতকাল শনিবার দুপুরে গণভবনে আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বর্ধিত সভায় সূচনা বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচনে নৌকা আর স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে। নির্বাচন শেষ, এখন সেটা ভুলে যেতে হবে। সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। যেখানে যেখানে সমস্যা হবে, আমাদের কেন্দ্রীয় কমিটি সেগুলো বসে সমাধান করবে।’
কৃষক যেন ন্যায্যমূল্য পায় তা নিশ্চিত করার কথা বলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ চাঁদাবাজি এবং মজুদদারি করতে না পারে সেদিকে কঠোর দৃষ্টি দিতে হবে। মালামাল যেখানে রাখা হয় বা নামানো হয় সেখানে যেন কেউ চাঁদাবাজি করতে না পারে, সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। কারণ, আপনারা জনপ্রতিনিধি, এই দায়িত্ব আপনাদেরই নিতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যেন ক্ষমতায় আসতে না পারে সেজন্য বারবার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়েছিল। সরকার যে জনগণের সেটা একমাত্র আওয়ামী লীগই প্রমাণ করেছে, একটানা চারবার দেশ পরিচালনা করায়।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০১৪, ২০১৮ সালে নির্বাচন যেন হতে না পারে সেজন্য চক্রান্ত হয়েছিল। এবারের নির্বাচনও ঠেকাতে বহু চেষ্টা হয়েছিল।’
তিনি বলেন, ‘এবারের নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়েছে। যারা বলেন নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হয়নি। তাদের কাছে আমার প্রশ্ন কীভাবে, কোথায় নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি, সেই প্রমাণ আপনাদের দিতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিশ্বের বহু বড় দেশে নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতা পায়নি, এমনকি খুনোখুনির ঘটনাও ঘটেছে। আর আমাদের দেশে একটা শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে। এর জন্য আমি জনপ্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক চেতনার দেশ, এখানে সবাই নিজ নিজ ধর্ম পালন করবে। প্রত্যেকের অধিকার সুরক্ষিত করতে হবে।’
সরকারের ধারাবাহিকতা থাকলে দেশের উন্নয়ন হয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটা বিষয় প্রমাণ হয়েছে যে একটা দেশের সরকার ধারাবাহিকভাবে থাকলে সে দেশের উন্নয়ন হয়। আমরা সেটা প্রমাণ করেছি।’
উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ‘১৯৯৬ সালে যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে, তখন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ বলেছিলেন একটা দেশে একটা সরকার একটানা ১৫ থেকে ২০ বছর সরকারে থাকলে, সে দেশের উন্নয়ন হয়। তার কথাটি সঠিক। কারণ, ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে আমরা যা যা উন্নয়ন করেছি, ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসে তা ধ্বংস করে দিয়েছে। ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে একটানা সরকার পরিচালনা করে আসছি বলেই প্রকৃতপক্ষে দেশটার উন্নয়ন হয়েছে। এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে হবে।’
জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচনে জনগণকে যেসব ওয়াদা দিয়েছেন, সেগুলো অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে হবে। কোনো যেন বদনাম না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। একটা কথা মনে রাখতে হবে যে, ক্ষমতা ভোগের নয়, ত্যাগের। কারণ, ওই ধনসম্পদ কোনো কাজে আসে না। মানুষের জন্য কাজ করে তাদের ভালোবাসা অর্জন করাটাই সবচেয়ে বড় কাজ। সেজন্য জনগণকে দেওয়া ওয়াদা পালন করতে হবে।’
তথ্যসূত্র: বিডি প্রতিদিন