বিভিন্ন কারনে বাড়ছে তার প্রদান কারন দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের অধিকাংশই প্রভাবশালী। রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ও আর্থিকভাবে তারা ক্ষমতার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। আর ক্ষমতাকে এরা সম্পদ বিকাশের হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করছে। কিন্তু রাষ্ট্রীয়ভাবে তাদের বিচার না করে কোথাও কোথাও পুরস্কৃত করা হচ্ছে। অর্থাৎ এক ধরনের বিচারহীনতার সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে। ফলে দুর্নীতি বাড়ছে ও অর্থ পাচার।
ঘুস ছাড়া সেবা মিলছে না। এছাড়াও বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থ, সরকারি কেনাকাটা এবং ঋণের নামে ব্যাংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এর উল্লেখযোগ্য অংশ বিদেশে পাচার করা হচ্ছে-যুগান্তরের কাছে এমন মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের আরও অভিমত-দুর্নীতি কমাতে হলে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। তাদের বার্তা দিতে হবে, আইন লংঘন করে অবৈধ আয় করলে পার পাওয়া যায় না। তবে আইনের সীমাবদ্ধতার কথা বলছেন, কেউ কেউ।
যারা কথা বলেছেন, তারা হলেন-সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম এবং বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাবেক সভাপতি ড. মইনুল ইসলাম।
প্রসঙ্গত, দুর্নীতিবিরোধী আন্তর্জাতিক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের (টিআই)র দুর্নীতির সূচকে বিশ্বে আরও দুই ধাপ পিছিয়েছে বাংলাদেশ। ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১০তম। ওই রিপোর্ট অনুসারে দুর্নীতি মূল্যায়নের তিনটি সূচক বলছে, ২০২৩ সালে বাংলাদেশে দুর্নীতি বেড়েছে। এই রিপোর্টের ওপর বিশিষ্টজনের প্রতিক্রিয়া জানতে চায় যুগান্তর। তবে টিআই’র পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট না দেখে কোনো ধরনের মন্তব্য করবে না দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন মঙ্গলবার যুগান্তরকে বলেন, টিআই’র রিপোর্ট আমি এখনো দেখিনি। এই রিপোর্টে কী আছে তা না দেখে মন্তব্য করা যাবে না।
জানতে চাইলে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্ট মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের বিচার হচ্ছে না। তারা বিভিন্ন অপরাধ করে পার পেয়ে যাচ্ছে। ফলে দুর্নীতি বাড়ছে। তিনি বলেন, বিভিন্ন সেবা নিতে গেলে ঘুস দিতে হয়। অর্থাৎ ঘুস ছাড়া সেবা পাওয়া কঠিন। ব্যাংকে ঋণখেলাপি বাড়ছে। ঋণ নিয়ে টাকা ফেরত দিচ্ছে না। একইভাবে বাড়ছে দেশ থেকে অর্থ পাচার। অবৈধভাবে আয় করা অর্থ তারা বিদেশে পাচার করে দিচ্ছে। কিন্তু এসব অপরাধীর শাস্তি হচ্ছে না। এতে তারা আরও উৎসাহিত হচ্ছে। এটি রোধ করতে হবে। মির্জ্জা আজিজ বলেন, দুর্নীতি কমাতে হলে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। তাদের বার্তা দিতে হবে, আইন লংঘন করে অবৈধ আয় করলে পার পাওয়া যায় না। এটি নিশ্চিত করতে পারলেই অপরাধ কমবে। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দুর্নীতি রোধে দুদকের কাজ করার কথা। কিন্তু তারা সে কাজ কতটা স্বাধীনভাবে করতে পারছে, তা বলা মুশকিল। তার মতে, দুর্নীতি রোধে দেশে আইন আছে, প্রতিষ্ঠান আছে কিন্তু কার্যকর প্রয়োগ নেই।
বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাবেক সভাপতি ড. মইনুল ইসলাম বলেন, কোনো সন্দেহ নেই যে, দেশে দুর্নীতি বেড়েছে। এটি বিশ্বাস করার কোনো কারণ নেই যে, দুর্নীতি কমেছে। অর্থাৎ টিআইবি যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সেটি সত্য। সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি ছেয়ে গেছে। আমরা দৈনন্দিন কাজ করতে গিয়ে এর প্রমাণ পাচ্ছি। তিনি বলেন, বিভিন্ন অফিসে সেবা নিতে গিয়ে আমাদের যেসব অভিজ্ঞতা হচ্ছে, তা টিআই’র রিপোর্টের সঙ্গে পুরোপুরি মিলে যাচ্ছে। শাসক দলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত এবং সরকারি আমলারা এসব দুর্নীতি করছে। ব্যাংকের ঋণখেলাপি ও অর্থ পাচার বাড়ছে। তার মতে, অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে না পারলে দুর্নীতি কমার সম্ভাবনা নেই। এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, টিআইবির মতো সংগঠনের রাজনৈতিক স্বার্থ থাকে। বিশ্বজুড়ে ক্ষমতার যে দ্বন্দ্ব সেখানে অবস্থানগতভাবে কোনো কোনো জোট বা দেশের স্বার্থ সংরক্ষণের পাহারাদার এসব প্রতিষ্ঠান।
তথ্যসূত্র: যুগান্তর
সম্পাদক : সাবিনা খানম,
প্রকাশক : এডভোকেট খোকন চন্দ্র গোপ,
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : মোঃ তারিকুল ইসলাম,
বার্তা সম্পাদক : মোঃ জাহাঙ্গীর আলম
Copyright © 2024 ইউনিয়ন সংবাদ. All rights reserved.