বিদেশে ভ্রমণকারী বাংলাদেশিদের ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। ২০২৩ সালে, মোট বিদেশী ক্রেডিট কার্ড খরচ ছিল ৮ হাজার ১৮৩ কোটি টাকা। এর আগের বছর লেনদেন হয়েছিল ৫ হাজার ১১৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ, এক বছরের মধ্যে বিদেশে বাংলাদেশিদের ক্রেডিট কার্ডে লেনদেন বেড়েছে ৩ হাজার ১৯ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
একক মাস হিসেবে গত ডিসেম্বরেও লেনদেন বেড়েছে। ডিসেম্বর মাসে বিদেশে ভ্রমণকারী বাংলাদেশিরা ৯২৯ কোটি টাকা খরচ করেছে। এর আগের মাসে লেনদেন হয়েছিল ৭৯৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ, মাসটিতে লেনদেন বেড়েছে ১৩১ কোটি টাকা বা ১৬.৪১ শতাংশ।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ডিসেম্বরে দেশে ও বিদেশে কার্ডের মাধ্যমে ৪৫ হাজার ৩৫২ কোটি টাকার লেনদেন হয়, যা নভেম্বরের তুলনায় ৬.৩৫ শতাংশ বেশি। নভেম্বরে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৪২ হাজার ৩৮৮ কোটি টাকা। ডিসেম্বর মাসে শুধু দেশের মধ্যে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ৪৪ হাজার ৪২২ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। ব্যবহারকারীর কারেন্ট অ্যাকাউন্ট বা সেভিংস অ্যাকাউন্টের বিপরীতে ব্যাংকের দেওয়া কার্ড হচ্ছে ডেবিট কার্ড। অন্যদিকে ধারে জিনিস কেনার আধুনিক রূপ হচ্ছে ক্রেডিট কার্ড। ব্যাংক এবং কয়েকটি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান সাধারণত ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে থাকে। দেশের ভেতরে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে স্থানীয় মুদ্রা টাকায় খরচ করা যায়। আবার বিদেশি মুদ্রায় অনলাইনে পণ্য কিনে বাইরে থেকে দেশে আনা যায়। আবার বিদেশভ্রমণের সময়ও ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার কেনাকাটা ও বিল পরিশোধ করা যায়। ডেবিট কার্ডের চেয়ে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে বিদেশি মুদ্রা খরচের পরিমাণ বাড়ছে দিনে দিনে। সাম্প্রতিক সময়ে কাগুজে ডলারের অপ্রতুলতায় ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে বিদেশি মুদ্রা খরচের পরিমাণ বেড়েছে।
ব্যাংক কর্মকর্তারা বলেছেন, করোনা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হচ্ছে। এর ফলে বৈশ্বিকভাবে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আগের তুলনায় ভালো হচ্ছে। আমাদের দেশের পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসতে শুরু করেছে। মানুষের আয় বাড়ছে। সব মিলিয়ে মানুষের বিদেশভ্রমণ আগের চেয়ে বাড়ছে। সবাই এখন বিদেশভ্রমণে কার্ডের মাধ্যমে ডলার নিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে কার্ডে ডলার খরচ বাড়ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বৈদেশিক মুদ্রার পাশাপাশি দেশি মুদ্রায়ও কার্ডভিত্তিক লেনদেন বেড়েছে। এটিএম, পিওএস, সিআরএম এবং কার্ডের মাধ্যমে ই-কমার্স লেনদেন ডিসেম্বর মাসে ১৬.৪৫ শতাংশ বেড়েছে।
তথ্যসূত্র: ইত্তেফাক