বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন ২০২৪-২০২৬এর ভোটগ্রহণ উৎসাহ উদ্দীপনায় মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে। বিএফডিসি প্রাঙ্গণে শিল্পী সমিতির কার্যালয়ে ভোটগ্রহণ শুরু হয় গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টায়। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত চলে এ ভোটগ্রহণ। এদিন উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট প্রদান করেছেন ৪৭৫ ভোটার।
শিল্পী সমিতির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, ভোটগ্রহণের পরপরই গণনা শেষে ফলাফল প্রকাশ করা হবে। রাত ১০টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ভোট গণনা চলছে বলে জানা গেছে।
এবারের নির্বাচনে ভোটার ৫৭০ জন। ২১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির এ নির্বাচনে ছয়জন স্বতন্ত্রসহ দুটি প্যানেল থেকে ৪৮ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছিলেন প্রযোজক খোরশেদ আলম খসরু। সদস্য হিসাবে আছেন নির্মাতা এজে রানা ও বিএইচ নিশান। এবার প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্যানেলের মধ্যে একটিতে জোট বেঁধেছেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের দাপুটে দুই অভিনেতা মিশা সওদাগর ও মনোয়ার হোসেন ডিপজল। আরেক প্যানেল থেকে লড়ছেন সোনালি দিনের নায়ক মাহমুদ কলি ও নায়িকা নিপুণ আক্তার।
ভোট দিতে একসঙ্গে তিন কন্যা : ঢালিউডের ‘তিন কন্যা’ বলা হয় বরেণ্য অভিনয় শিল্পী সুচন্দা, ববিতা ও চম্পাকে। ষাট, সত্তর, আশি ও নব্বই- এ চার দশক চলচ্চিত্রপ্রেমীদের ক্রমান্বয়ে মাতিয়ে রেখেছিলেন তারা তিন বোন। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে উপহার দিয়েছেন অসংখ্য জনপ্রিয় ও কালজয়ী সিনেমা। এ তিন বোন একসঙ্গে বিএফডিসিতে এসেছিলেন ভোট দিতে। দুপুরের বিরতির পর ২টা ৪৫ মিনিটে বিএফডিসিতে আসেন তারা। শিল্পীরা তাদের দেখে আনন্দে স্লোগান দেন।
ভোট দেওয়া শেষে ববিতা বলেন, এফডিসিতে আসা বন্ধই করে দিয়েছিলাম। অনেকদিন পর এলাম। সবার সঙ্গে দেখা হবে, সে কারণেই আসা। যারা সত্যিকার অর্থে কাজ করবেন তাদেরকেই ভোট দিয়েছি।
সুচন্দা বলেন, ভোট দিতে প্রত্যেকবারই আসি। এখন নতুন-পুরাতন সবাই মিলে নির্বাচনে নেমেছেন। আমাদের এ সমিতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যারা সততার সঙ্গে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করবেন বলে মনে হয়েছে তাদেরকেই ভোট দিয়েছি। যাতে আমাদের সংগঠন আরও সুন্দর হয়।
চম্পা বলেন, যারা নির্বাচন করছেন প্রত্যেকে আমার প্রিয়। আমি মনে করি, আমরা সবাই মিলে এক। সবাই মিলে যদি এগিয়ে আসতাম তাহলে আমাদের শিল্পটাকে অনেক এগিয়ে নিতে পারতাম।
নীরবে এফডিসি ত্যাগ করলেন ইলিয়াস কাঞ্চন : ২০২২ সালে শিল্পী সমিতির নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক নিপুণের সঙ্গে সভাপতি পদে নির্বাচিত হন ইলিয়াস কাঞ্চন। শুরু থেকেই আলোচনার পাশাপাশি কাঞ্চন-নিপুণ পরিষদকে অনেক বেশি সমালোচনাও মোকাবিলা করতে
হয়েছে। অভ্যন্তরীণ নানা কোন্দলে কমিটির নির্বাচিত ২১ সদস্যকে একসঙ্গে দুই বছরে একটি সভায়ও পাওয়া যায়নি। নির্বাচিত একাধিক সদস্যের সদস্যপদও বাতিল করা হয়। এমন পরিস্থিতির কারণে হয়তো সদ্য বিদায়ি সভাপতি হিসাবে ভোট দিতে এসে মুখে কুলুপ এঁটেছিলেন তিনি।
ভোট দেওয়ার পর অন্য শিল্পীরা যেখানে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন, জানিয়েছেন নতুন কমিটির কাছে প্রত্যাশার কথা, সেখানে ভোট দিয়ে অনেকটা নীরবেই চলে যান এ অভিনেতা।
তথ্যসূত্র: যুগান্তর