1. admin@unionsongbad.com : admin :
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:০৯ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
আজ থাইল্যান্ড সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী আবারোও স্বর্ণের দাম ভ‌রিতে কমলো ৩১৩৮ টাকা আসন্ন ১৫০ উপজেলা ভোটে প্রতীক বরাদ্দ আজ কাতারের আমিরের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম আবার বাড়ল, তবে খোলা সয়াবিন তেল লিটারপ্রতি ২ টাকা কমিয়ে ১৪৭ টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার। এক সপ্তাহ পর ২৩ জন নাবিকসহ বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ আজ রবিবার বিকেলে দুবাইয়ে পৌঁছবে প্রচণ্ড গরমের সঙ্গে আর্দ্রতা জ্বালা ধরাচ্ছে শরীরে, ঘর থেকে বের হলেই যেন মরুভূমির লু হাওয়া শিল্পী সমিতির 2024 নির্বাচন সভাপতি মিশা সওদাগর সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হোসেন ডিপজল চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ভোট ২০২৪ সম্পন্ন স্মরণকালের রেকর্ড বৃষ্টিপাতে নজিরবিহীন বন্যা দেখা দিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের

পবিত্র মাহে রমজানের প্রস্তুতি

ইউনিয়ন সংবাদ ডেস্ক :
  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০২৪
  • ১৫৯ বার পঠিত

ইসলামে শাবান মাসের গুরুত্ব ও ফজিলত অপরিসীম। কেননা, শাবান মাস, পবিত্র মাহে রমজানের প্রস্তুতির মাস।

এছাড়া বিশ্বনবি (সা.) এ মাসে অনেক বেশি নফল ইবাদতে রত থেকে অতিবাহিত করতেন এবং তার উম্মতকেও নফল ইবাদতের শিক্ষা দিয়েছেন। আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের অনুগ্রহে আমরা শাবান মাসে প্রবেশ করেছি, আলহামদুলিল্লাহ।

রমজানের প্রস্তুতি হিসাবে শাবান মাসের অনেক ফজিলত এবং বেশ কিছু করণীয়ও রয়েছে। এ বিষয়ে হাদিসে এসেছে হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, ‘আল্লাহর রাসূল (সা.) শাবান মাসের তারিখ এতটাই মনে রাখতেন; যতটা অন্য মাসের তারিখ মনে রাখতেন না।

শাবানের ২৯ তারিখ চাঁদ দেখা গেলে পরের দিন রমজানের রোজা রাখতেন। আর সে দিন আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলে শাবান ৩০ দিন পূর্ণ করে রমজানের রোজা শুরু করতেন।’ (আবু দাউদ)।

পবিত্র রমজান মাস ছাড়াও অন্য মাসে মহানবি (সা.) নফল রোজা রাখতেন, বিশেষ করে শাবান মাসে তিনি নফল রোজা রাখাকে অনেক ফজিলত মনে করতেন। শাবান মাসের রোজার ফজিলত সম্পর্কে হাদিসে এভাবে বর্ণিত হয়েছে, হজরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) বর্ণনা করেন, একদা মহানবি (সা.)কে জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রাসূল!

কোন রোজার ফজিলত বেশি? উত্তরে তিনি বললেন, ‘রমজান মাসের সম্মানার্থে শাবান মাসে কৃত রোজার ফজিলত বেশি। আবার জিজ্ঞেস করা হলো, কোন দানের ফজিলত বেশি? উত্তরে তিনি বললেন, রমজান মাসে কৃত দানের ফজিলত বেশি।’ (বায়হাকি)

হজরত উসামা বিন যায়েদ (রা.) রাসূল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল (সা.)! শাবান মাসে আপনাকে যত রোজা রাখতে দেখি, অন্য মাসে এত পরিমাণ রোজা রাখতে দেখিনি। অর্থাৎ আপনি কেন এ মাসে এত বেশি রোজা রাখেন? রাসূল (সা.) বলেন ‘এটি এমন একটি মাস, যা রজব এবং রমজানের মতো গুরুত্বপূর্ণ দুটি মাসের মধ্যে পড়ে।

আর অধিকাংশ মানুষ এ মাসটি সম্পর্কে গাফেল থাকে। অর্থাৎ উদাসীন থাকে। যার ফলে তারা ভালো আমল করে না। তারা ভাবে, রমজান তো আছেই।’ (নাসাঈ)। হাদিস পাঠে আরও জানা যায়, শাবান মাস আসার আগেই মহানবি (সা.) দুহাত তুলে এ দোয়া পাঠ করতেন এবং সাহাবাদেরও পড়তে বলতেন, ‘আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রজাবা ওয়া শাবানা ওয়া বাল্লিগনা ইলা শাহরি রমাদান’ (মসনদে আহমদ)। অর্থাৎ হে আল্লাহ! তুমি আমাদের জন্য রজব ও শাবান মাসে বরকত দাও এবং আমাদের রমজান পর্যন্ত পৌঁছে দাও।

তাই এ মাসকে বলা হয় মাহে রমজানের আগমনী বার্তা। শাবান মাস, পবিত্র মাহে রমজানের প্রস্তুতির মাস। হজরত রাসূল (সা.) শাবান মাসে অন্য মাসের তুলনায় বেশি বেশি নফল রোজা, পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত ও নামাজ আদায় করে মাহে রমজানের পূর্ব প্রস্তুতি গ্রহণ করতেন।

উম্মুল মুমিনিন হজরত আয়েশা (রা.) বলেছেন, ‘মহানবি (সা.) কখনো নফল রোজা রাখতে শুরু করলে আমরা বলাবলি করতাম, তিনি বিরতি দেবেন না। আর রোজায় বিরতি দিলে আমরা বলতাম যে, তিনি মনে হয় এখন আর নফল রোজা রাখবেন না। আমি মহানবি (সা.)কে রমজান ছাড়া অন্য কোনো মাসে পূর্ণ একমাস রোজা পালন করতে দেখিনি। কিন্তু শাবান মাসে তিনি বেশি নফল রোজা রেখেছেন’ (মুসলিম)। অপর একটি হাদিসে বর্ণিত আছে, ‘শাবান মাস ছাড়া অন্য কোনো মাসে রাসূল (সা.) এত অধিক হারে নফল রোজা আদায় করতেন না’ (বোখারি)।

রমজানের আগমনের জন্য মহানবি (সা.) দিনক্ষণ গণনা করতেন। হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূল (সা.) শাবান মাসের (দিন-তারিখের হিসাবের) প্রতি এত অধিক লক্ষ রাখতেন, যা অন্য মাসের ক্ষেত্রে রাখতেন না। (সুনানে আবু দাউদ)। হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, আমি নবি করিম (সা.)-কে শাবান মাসের মতো এত অধিক (নফল) রোজা আর অন্য কোনো মাসে রাখতে দেখিনি। এ মাসের সামান্য কয়েকদিন ছাড়া সারা মাসই তিনি রোজা রাখতেন। (সুনানে তিরমিজি)।

স্রষ্টার পর মাখলুকের মধ্যে মহানবি (সা.)-এর স্থান প্রথম হওয়ার পরও তিনি রমজানের প্রস্তুতি হিসাবে আগে থেকেই রোজা রাখা শুরু করতেন। বিশ্বনবি (সা.) এ মাসে অধিকহারে নফল ইবাদত-বন্দেগি করতেন। এ সম্পর্কে হজরত আনাস (রা.) বলেছেন, মহানবিকে (সা.) জিজ্ঞেস করা হলো, ‘আপনার কাছে মাহে রমজানের পর কোন মাসের রোজা উত্তম?’ তিনি বললেন, ‘রমজান মাসের সম্মান প্রদর্শনকল্পে শাবানের রোজা উত্তম’ (তিরমিজি)।

মাহে রমজানে দীর্ঘ ৩০টি রোজা পালনের কঠিন কর্মসাধনা সহজভাবে আদায় করার প্রস্তুতির ক্ষেত্রে শাবান মাসের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। কেননা, আমরা যদি রমজান শুরু হওয়ার আগেই শাবান মাসে কয়েকটি নফল রোজা রেখে নিই তাহলে রমজানের রোজা রাখতে আমাদের জন্য অনেক সহজ হবে। এ মাসে বিশেষ কিছু নফল আমল রয়েছে, যা আমল করলে আমরা জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি লাভ করতে পারি এবং জান্নাত লাভের পথ সুগম হবে। এছাড়া মোমেন মুত্তাকিরা বরকতপূর্ণ শাবান মাস থেকেই ইবাদতের একটি রুটিন তৈরি করে নেন যে, আগের রমজান থেকে আগত রমজানে কি কি নেক আমল বেশি করবে।

হাদিসে এসেছে হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, ‘মহানবি (সা.)-এর প্রিয় মাসের একটি হলো শাবান। এ মাসে নফল রোজা আদায় করেই তিনি মাহে রমজানের রোজা পালন করতেন’ (আবু দাউদ)।

তাই আমরাও যদি শাবান মাসে বেশি বেশি নফল ইবাদতে অতিবাহিত করি আর আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে দোয়া করতে শুরু করি, হে পরম দয়াময় আল্লাহ! তুমি আমাকে সুস্থ রাখ, আমি যেন আগত রমজানে আগের তুলনায় অনেক বেশি ইবাদত-বন্দেগি, দান-খয়রাত, কুরআন পাঠসহ সব পুণ্যকর্ম অধিকহারে করতে পারি। আমরা যদি আন্তরিকতার সঙ্গে আল্লাহ পাকের দরবারে ক্রন্দনরত হয়ে দোয়া করি তাহলে তিনি আমাদের রমজানের কল্যাণ থেকে বঞ্চিত করবেন না। আল্লাহতায়ালা আমাদের তৌফিক দান করুন, আমিন।

লেখক : ইসলামি গবেষক ও কলামিস্ট
তথ্যসূত্র: যুগান্তর

Facebook Comments Box
এই জাতীয় আরও খবর
© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৩ ইউনিয়ন সংবাদ
Theme Customized BY